চবি অতীশ দীপংকর শ্রীজ্ঞান হল উদ্বোধন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীশ দীপংকর শ্রীজ্ঞান হলের আবাসিক কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শনিবার ৩ মে, ২০২৫ দুপুর ১২.৩০ টায় হলের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল-আমীন। অতীশ দীপংকর শ্রীজ্ঞান হলের প্রভোস্ট এ.জি.এম. নিয়াজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং হলের ডেপুটি রেজিস্ট্রার দিবাকর বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অতীশ দীপংকর শ্রীজ্ঞানের জীবনী পাঠ করেন হলের আবাসিক শিক্ষক মো. নূরে আলম। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জনি বড়ুয়া ও ভূবন চাকমা।
 
চবি উপাচার্য বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত। অন্তবর্তী সরকার আমাদেরকে দায়িত্ব প্রদানের মাত্র ৬ মাসের মধ্যে আমরা দুটি আবাসিক হল চালু করতে সক্ষম হয়েছি; যা বিগত প্রশাসন দীর্ঘ সময় পার করেও চালু করতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, নতুন হলে উঠা অন্য রকম একটা অভিজ্ঞতা। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের হলের সার্বিক কার্যক্রমে যত্নশীল হওয়ার আহবান জানান। উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে একটা পৃথিবী। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে এমন সক্ষমতা অর্জন করতে হবে যাতে বিশ্বের যে কোন জায়গায় গিয়ে নিজের অবস্থান ও সক্ষমতা জানান দিতে পারেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমিত সম্পদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উপাচার্য হলের সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণে হল প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি রাখার আহবান জানান। তিনি হলে সিটপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে উপাচার্য সকলকে সাথে নিয়ে হলের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখেন।
 
উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মানে হচ্ছে বিশ্বমানের পড়ালেখা, যেখানে বিশ্বমানের পাঠদান করা হয়। তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আধুনিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উদ্ভাবনমুখী শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে, যেখানে মাল্টিডিসিপ্লিনারী শিক্ষা ও মাল্টিকালচারাল পরিবেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। জ্ঞান, গবেষণা ও সৃজনশীলতার বিকাশে এ বিশ্ববিদ্যালয় হবে একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম, যেখানে দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থী ও গবেষকরা একত্রিত হয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ চিন্তা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পাবেন। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে আধুনিক পাঠ্যক্রম, আন্তঃবিভাগীয় সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। উপ-উপাচার্য শিক্ষার্থীদেরকে হলে শৃংখলাপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করার আহবান জানান।
 
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) বলেন, চবির বিগত প্রশাসন এ হলে পর্যায়ক্রমে ৪ জন প্রভোস্ট নিয়োগ দেয়ার পরও হলের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম চালু করতে পারেনি, এটা বড় লজ্জার। বর্তমান প্রশাসন যোগ্য প্রভোস্ট নিয়োগের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় আসন বরাদ্দ কমিটির মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের মতামত ও পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়ে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে হলে সিট বরাদ্দ দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, পরিবেশবান্ধব ও সবুজ ক্যাম্পাস গড়ে তোলার প্রয়াসে সকলের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরকে নিজ নিজ আবাসিক হলের আশেপাশে গাছ লাগাতে হবে। গাছ শুধু পরিবেশ রক্ষা করে না, বরং মনের প্রশান্তিও এনে দেয়। এ হলগুলোকে আমরা যেন সত্যিকারের ‘শান্তির নীড়’ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে হলে শান্তি-শৃংখলা বজায় রেখে বসবাসের আহবান জানান।
 
অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথি ড. মোহাম্মদ আল-আমীন হলে সিটপ্রাপ্ত আবাসিক শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান। তিনি হলের কক্ষ ব্যবহার এবং অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনায় সকলকে যত্নবান ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলসমূহের প্রভোস্ট, প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, ছাত্র-ছাত্রী ও পরামর্শ কেন্দ্রের পরিচালক, বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষকসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
Scroll to Top