নিউ মার্কেট-চবি ক্যাম্পাস দ্রুতযান বাস সার্ভিস চালু - পৌঁছা যাবে দ্রুত, কমবে ভোগান্তি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও দ্রুতযান স্পেশাল সার্ভিস কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। তার আলোকে দ্রুতযান সার্ভিস উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।
আজ (১১ ডিসেম্বর, ২০২৪) সকাল ১০:০০ টায় চবি ক্যাম্পসের স্মরণ চত্বরে ‘চবি ক্যাম্পাস থেকে নিউ মার্কেট পর্যন্ত দ্রুতযান বাস সার্ভিস চালু’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মোঃ কামাল উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি জনাব হাজী রুহুল আমীন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চবি সহকারী প্রক্টর প্রফেসর মোঃ বজলুর রহমান।
চবি উপাচার্য বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আজকের দিনটি আনন্দের। আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণভোমরা। তাদের পদচারণায় এ ক্যাম্পাসে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে। তিনি বলেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নিম্ন-মধ্যবৃত্ত পরিবার থেকে আসে। চট্টগ্রাম শহর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস দূরে হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের চবি ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়ায় অনেক কষ্ট হয়। বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ ব্যবস্থার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিশেষ করে শাটল ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি, নিরাপদ বগি সরবরাহসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। চবি ক্যাম্পাস থেকে নিউ মার্কেট পর্যন্ত দ্রুতযান বাস সার্ভিস চালুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যাতাযাত ব্যবস্থা অনেকাংশে উন্নত হবে মর্মে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। তিনি এ সার্ভিস পরিচালনায় রাস্তায় যাতে কোন ধরনের যানজট সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার এবং সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহবান জানান।
মাননীয় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘসময় ধরে চট্টগ্রাম, নাজিরহাট, খাগড়াছড়ি বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতি সুনামের সাথে যে যাত্রীসেবা দিয়ে আসছে, তা ধরে রাখতে হবে। চবি শিক্ষার্থীদের উন্নত যাত্রীসেবা প্রদানে গাড়ীর চালক ও সহকারীদের সহনশীল আচরণ করার জন্য তিনি আহবান জানান। এ বিষয়ে সমিতির নেতৃবৃন্দকে দৈনন্দিন পর্যবেক্ষণের জন্য আহবান জানান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে চবি প্রক্টর প্রফেসর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ ও চট্টগ্রাম, নাজিরহাট, খাগড়াছড়ি বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির (রেজি নং-১৭৩৩) পক্ষে সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মো: ফারুক খান ১ বছরের এ চুক্তিতে (নবায়ন যোগ্য) স্বাক্ষর করেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চ.বি) রেলস্টেশন সংলগ্ন জিরোপয়েন্ট থেকে দ্রুতযান স্পেশাল সার্ভিসের বাস সমূহ নিউমার্কেট পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে ২০ মিনিট পর পর ছেড়ে যাবে এবং নিউমার্কেট হতে চবি ক্যাম্পাসে ফিরে আসবে। যাত্রী পূর্ণ হলে গাড়ী নির্ধারিত সময়ের পূর্বে ছেড়ে যাবে। আরও উল্লেখ্য যে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিনে বাস ছাড়ার সময় পরিবর্তিত হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা (আইডি কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে) ক্যাম্পাস জিরো পয়েন্ট হতে মুরাদপুর পর্যন্ত জনপ্রতি ২৫ (পঁচিশ) টাকা হারে, নিউমার্কেট পর্যন্ত ৩০ (ত্রিশ) টাকা হারে টিকেট ক্রয় করবেন এবং সাধারণ যাত্রীরা ৪০ (চল্লিশ) টাকা হারে টিকেট ক্রয় করবেন। নিউমার্কেট হতে ক্যাম্পাস (জিরো পয়েন্ট) পর্যন্ত ৩০ (ত্রিশ) টাকা এবং মুরাদপুর থেকে ক্যাম্পাস পর্যন্ত ২৫ (পঁচিশ) টাকা হারে টিকেট ক্রয় করবেন। নিদিষ্ট টিকেট কাউন্টার থেকে শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রীরা (শিক্ষার্থী ব্যতিত) টিকেট ক্রয় করবে, তবে এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দ্রুতযান এর নিউমার্কেট/মুরাদপুর হতে হাটহাজারীগামী বাসসমূহেও একই হারে ভাড়া প্রদান করে নিউমার্কেট/মুরাদপুর হতে বিশ্ববিদ্যালয় ১নং পর্যন্ত যাতায়াত করতে পারবে। চবি ক্যাম্পাস হতে সকাল ৬:০০ টায় প্রথম বাস এবং রাত ১০:৩০ টায় শেষ বাস ছেড়ে যাবে। অপরদিকে নিউমার্কেট থেকে সকাল ৬:০০ টায় প্রথম বাস এবং রাত ১১:৩০ টায় শেষ বাস ছেড়ে আসবে। কোন অবস্থাতেই চালক বা সহকারী শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ করতে পারবে না। কোন চালক বা সহকারী শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ করলে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টর মহোদয় বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করবে। কোন চালক বা সহকারী শিক্ষার্থী কর্তৃক কোন প্রকার অশোভন আচরণের সম্মুখীন হলে তা দ্রুতযান কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।